দীপু নাম্বার টু দেখেছো তোমরা? আমাদের দেশে শিশুতোষ সিনেমা খুবই কম। আসলে আমাদের দেশে সিনেমার সংখ্যাই খুব একটা আশাব্যঞ্জক না ; সেখানে শিশুতোষ তো আরো পরের বিষয়। আমার বন্ধু রাশেদ বা মাটির ময়না কে সরাসরি শিশুতোষ মুভি বলাও যায় না ঐ অর্থে। শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠান অবশ্য হয়েছে ঢের। মীনা, সিসিমপুর সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান বেশ সাড়া জাগানো ছিলো শিশুদের মাঝে।
আমাদের দেশে হয়তো হয়নি, তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত কিন্তু এসব দিকে বহু এগিয়ে। ঈশানের কথা মনে আছে তোমাদের? ঐ যে ‘ তারে জামিন পার ‘ সিনেমার। কি দারুণ অভিনয় করেছিলো সে বলো। ঐ সিনেমার ‘ বাম বাম বোলে ‘ গানটা তো তোমাদের ফেভারিট লিস্টে থাকার কথা। ঐ গানটার নামেই আরেকটা ছবি হয়েছিলো। সেটাও বেশ সাড়াজাগানো ছিলো। এই শিশুতোষ সিনেমা নিয়ে কথা বলতে গেলে সেদেশের চিল্ড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নিয়েও কথা আসে।
বিদেশ -বিভুইয়ে কিন্তু এমন চিল্ড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের কিন্তু অভাব নেই। গোল্ডেন এলিফ্যান্ট নামে একটা বিশাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয় ভারতেই। শিশুতোষ চলচ্চিত্র নিয়ে এ আয়োজন। আশার কথা কি জানো, আমাদের বাংলাদেশেও কিন্তু এমন শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব কিন্তু অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের প্রায় ১৫০ টিরও অধিক দেশ থেকে চলচ্চিত্র নিয়ে আসেন শিশু-কিশোরেরা।
আসলে গ্যাপ আছে কিছু আমাদের। আমাদের অনেক সেলেব্রিটি শিশু ইউটিউবার বা ব্লগার আছেন। তাঁরা কিন্তু নিজ উদ্যোগে ডকুমেন্টারি বা শর্ট ফিল্মও বানাচ্ছে। তবে কোথায় যেন সমন্বয়ের অভাব আছে। বা অনেকেই হয়তো নেহাত শখেই এসব করে থাকে। কিন্তু একটু ভাবো তো, সমন্বিত উদ্যোগ হলে হয়তো আমরা আরো বড় ধরনের কাজ উপহার পেতাম নিশ্চয়ই।
যুগটা এখন এমন হয়েছে যে আমাদের ভালোলাগার জায়গাটাই আমাদের ক্যারিয়ার হতে পারে চাইলেই।তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষতা নিশ্চিত ভাবেই আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। তাই ভালোলাগার জায়গাগুলোতে শাণ দেয়া দরকার একদম গোঁড়া থেকেই। সিনেমা নিয়েই যখন কথা বলছি, একটু মনে করিয়ে দেই থ্রি ইডিয়টস মুভিতে আমিরের একটা সংলাপের কথা। যদি শচীনকে তাঁর বাবা গায়ক হতে বলতো তাহলে কী হতো ভাবো একবার।
অনেক কথা বলেছি, তাই না! ফিল্ম নিয়ে কথা বলা শুরু করেছিলাম। আসলে এখানে ফিল্মের জায়গায় অন্যকিছুর উদাহরণও দেয়া যেত। হোক সেটা ফুটবল বা রাগবি, বা ধরো,ছবি আঁকা, গান গাওয়া। তাই, জহুরীর ভূমিকা মা-বাবাকেই নিতে হবে। এমন না যে, শিশুকে তার প্র্যাত্যহিক জীবন থেকে বিমুখ করিয়ে দিতে হবে। তবে শিশুর ঝোঁক যে দিকে সেই জায়গাটাতে তাকে বিচরণের সুযোগটা দিতে হবে।
আর হুইসেলে আমরা এসব কেন লিখছি জানো? আমরা শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশের একটা প্লাটফর্ম উপহার দিতে চাই। সেই উপহারটুকু আমরা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবো। আমরা চাই, শিশুরা ডকুমেন্টারি নিয়ে শিখুক শেখার বয়সেই। কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে এসব করার বাস্তবতা খুব একটা নেই আর।
দীপু নাম্বার টু এর মত চলচ্চিত্র আমাদের শিশু-কিশোররাই বানাবে। শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বছরে এক-আধবার নয়, বরং বছরব্যাপী হবে। চলচ্চিত্র কে কেন্দ্র করে কেবল উৎসব নয়, চলচ্চিত্র বানাতে বানাতে আর শিখতে শিখতেই পরিবেশ হবে উৎসবমুখর।
লেখাটি নিয়ে মতামত