আজ তোমাদের একটা অনন্য ফেস্টিভ্যালের কথা শেয়ার করি। বাথ চিল্ড্রেন ফেস্টিভ্যাল। ইউরোপের সবচেয়ে বড় ফেস্টিভ্যাল ; যেটা নাকি শুধু মাত্র শিশুদের টার্গেট করে করা হয়। বাঘা বাঘা সব মিউজিশিয়ানস, লেখক, সাংবাদিকরা এই উৎসবে আসেন বক্তা হিসেবে।
খেয়াল করে দেখো, উনারা কিন্তু বক্তা হিসেবে আসেন। কাদের জন্য বক্তা জানো? ঐ শিশুদের জন্যই। একটু খুলে বলি বিষয়টা। আসলে এর মুল নাম Bath Children’s literature festival. শিশু সাহিত্যিকদের টার্গেট করেই মূলত এই ফেস্টিভ্যাল। যারা লেখালেখি, ক্রিয়েটিভ আর্ট, কলা বা শিল্প-সংস্কৃতির যে কোন দিকে আগ্রহী তাঁরাই এই উৎসবের মুল টার্গেট।
মজার না বিষয়টা! আমাদের দেশে কিন্তু শিশুতোষ সাহিত্যিকের অভাব নেই একেবারেই। বেশ ভালো কিছু শিশুতোষ সাহিত্য আমাদের এই অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। কিন্তু বাথ ফেস্টিভ্যালের মত এমন কিছু অবশ্য চোখে পড়েনি এখনো। ‘দীপু নাম্বার টু ‘, ‘আমার বন্ধু রাশেদ ‘ বা মীনা সিরিজ কিংবা কিশোর গোয়েন্দা এমন অনেক কিছুই আমাদের শিশুতোষ সাহিত্যিক অনুষঙ্গ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর পেছনের কারিগরেরা কিন্তু কোন শিশু-কিশোররা নন। আমাদের বড়রাই এসব করে এসেছেন বা করে চলেছেন।
বাথ ফেস্টিভ্যাল এই জায়গায় অনন্য! তাঁরা শিশুদের নিয়েই শিশুতোষ এসব কাজ করাতে চায়। বলা ভালো তাঁরা এসব করায়ও। আর অসাধারণ ব্যাপার হলো তাঁরা সবাইকে এক ছাদের নীচে নিয়ে এসে এসব করায়। তালিম দেয়ার জন্য তো তাবড় বড় মানুষগুলো আছেনই। আমাদের যেমন ক্ষুদে গানরাজ আছে, আছে সেরা নাচিয়ে বা আরো বিভিন্ন শিশুতোষ আয়োজন। বাথ ফেস্টিভ্যাল ঠিক ঐ কাজটুকুই করে। তবে সবকিছু একছাদের নীচে এনেই তাঁরা এসব করে। এখানেই তাঁদের বিশেষত্ব। তাঁদের অনন্যতা।
এই যে ম্যাগাজিনের লেখাগুলো তোমরা পড়ছো, মানে হুইসেলের লেখা, এই ম্যাগাজিনটাও কিন্তু তেমনই একটা শিশুতোষ প্লাটফর্মের স্বপ্নই দেখে।
শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ, শিশুরাই সেই স্বপ্ন। তোমরা হয়তো ভাবতে পারো, এ তো তাহলে সেই বাথ ফেস্টিভ্যাল এর মতোই। তাতে কি খুব একটা সমস্যা হবে বলো? কারণ, ওদের মত হতে তো সমস্যা নাই যদি আমরাও ওদের মতোই একদল সৃজনশীল শিশু সাহিত্যিক তৈরী করতে পারি! যদি সে রকম কোন ফেস্টিভ্যালের হাত ধরেই যদি তোমাদের কোন বন্ধু যদি নতুন দিনের আনোয়ার হোসেন হয়ে উঠে। সত্যজিতের মত যদি কেউ রোমহষর্ক ‘নতুন ফেলুদা ‘ রচনা করে বসে।
ভাবতেই কেমন একটা মজা লাগছে, তাই না? তবে শুধু ভাবনা নয়, আমরা এটা তোমাদের উপহার দিবোই।
একসময় এদেশে ‘ বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলন ‘ হতো। দুই বাংলার শিশুদের নিয়ে ‘ বঙ্গীয় শিশু সাহিত্য সম্মিলন ‘ হলে কেমন হবে বলো তো? যুগটা কমিউনিকেশনের, যুগটা সংযোজনের, যুগটা বন্ধনেরও বটে। বাঁশিটা তোমাদের হুইসেল ম্যাগাজিনই বাজাবে।
লেখাটি নিয়ে মতামত