একটি ভালো ক্যামেরার ফোন অথবা বড় কোনো স্টুডিও বা দামি কোনো ডিভাইস আর ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে ভিডিও করে আপলোড দিয়ে দিলাম, এটার নাম যদি হয় ভিডিও তাহলে বলব আপাতদৃষ্টিতে আপনার ধারণা ঠিক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে কিন্তু তা ভুল!
যেকোনো রান্নার জন্যই কিন্তু বিভিন্ন ধরণের মশলা প্রয়োজন হয়, খাবারটাকে সুস্বাদু করার জন্য। তবে সবকিছুর মধ্যেও লবণ কিন্তু থাকাই লাগবে। ঠিক তেমনই ভিডিওর প্রধান উপকরণ হচ্ছে কন্টেন্ট। কন্টেন্ট যদি চোখে লাগার মত না হয় তাহলে সেই ভিডিও মানুষ এড়িয়ে যাবে।
বর্তমান পরিস্থিতিটাই এমন যে ঘরে বসে থেকে কাজ করার কাজ-ই যেন প্রায় ফুরিয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন দুনিয়া। অনলাইন জগতে প্রবেশ করাটা এখন মানুষের কাছে সবচেয়ে সহজ কাজ হয়ে গিয়েছে। একই সাথে বেড়েছে অনলাইন জগতের বিশাল এক জায়গা “ইউটিউব চ্যানেল।” পরিবারের ছোট সদস্য থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও দিন দিন ইউটিউবের ভিডিও নিয়ে একে অপরের সাথে আলোচনায় মেতে উঠছে।
পরিস্থিতিটাই এমন যে সবার হাতে হাতেই আছে এখন স্মার্টফোন সেই সুবাদে ইউটিউব এখন সবার ঘরে ঘরে।সময় কাটানোর বড় মাধ্যমও হয়েছে এখন ইউটিউব। নিত্যনতুন ভিডিওর মাধ্যমে মাতিয়ে রাখছে প্রতিটি মানুষকে।। ইউটিউবের রাজ্যত্ব এখন সত্যিই ইউটিউবারদের হাতে।ভিডিও করাই যখন একটি মানুষের নেশা তখন অনেকেই ইউটিউবকেই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে নিচ্ছে নিজেদের পেশা।
উম্মে মাইসুন-ভিডিও জগতে এক সাড়া জাগানো নাম। কন্টেন্ট, কথা বলার ধরণ সবটাই যেন মাইসুনের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এবং শিশু-কিশোরসহ অন্যান্যরাও খুব পছন্দ করছে। কিন্তু বেশ কিছুদিন আগেই এই উম্মে মাইসুনকে কেউ চিনতও না। তবে মাইসুন ইউটিউব জগতে বাজিমাত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে। ইউটিউবে আছে বহু চ্যানেল তবে মানুষ কয়টা চ্যানেলের ভিডিও দেখে?
অবশ্যই সবার উত্তর হবে যে, যার যার ইচ্ছে অনুযায়ী, পছন্দনীয় মানুষের ভিডিও দেখে। তবে ইউটিউবাররা কিন্তু অনেক বিষয় চিন্তা করে একটি ভিডিও তৈরি করে থাকে । কারণ একটাই, সবার স্বাদ একই রকম নয়।ভিন্ন স্বাদ আছে বলেই আমরা এক এক জন ভিন্ন স্বাদের মানুষ।
“আহমেদ ব্রাদার্স ও এসপি ক্রিয়েশন”- ইউটিউব ভিডিওতে বিনোদনের সেরা দুইটি চ্যানেল। বাচ্চারা কিন্তু চায়ই সারাদিনের ব্যস্ততা কাটিয়ে সামান্য একটু বিনোদন। আর এই চ্যানেল কিন্তু গুটি গুটি পায়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রথমেই বলেছি শুধু ভালো রেজোল্যুশনের ভিডিও আপলোড করলেই হবে না বরং ভিডিওর মান ভালো হওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে ভিডিওর মাধ্যমে কিন্তু আমরা অনেকের কাছে খুব সহজেই পৌঁছাতে পারি, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের সেই সুবিধাটা করে দিয়েছে। সেই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুপ্ত প্রতিভার প্রকাশও ঘটানো সম্ভব।কেননা কেউ আছে খুব ভালো লিখতে পারে কিন্তু ভিডিওতে কথাই বলতে পারে না। আবার অনেকেই আছে ভিডিওতে কথা বলাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং তাদের কথা বলার ধরণটাও এমন যে ভিডিওর দ্বারাই তারা হয়ে উঠছে সবার কাছে জনপ্রিয়। এমনকি জনপ্রিয়তার ফলে তারা বিশ্ববাসীর কাছেও পরিচিত হচ্ছে।
একজন মানুষ সবজান্তা হয় না বরং ধীরে ধীরে তার আগ্রহ থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে চর্চা করে থাকেন আর সেই বিভিন্ন বিষয়ের ধারণা যখন তিনি কেবল কয়েকটি ভিডিওর মাধ্যমে সহজেই সবার সামনে তুলে ধরেন তখন অন্যান্য চ্যানেলের থেকে তার চ্যানেল পরিচিত হতে কিছু সময়ের ব্যাপার মাত্র। জনপ্রিয় মাধ্যম এই ইউটিউবে সময়োপযোগী ভিভিও আপলোড করে নিমিষেই হয়ে যাচ্ছে সেলিব্রিটি তবে যাত্রাটা কি ততটাই সহজ, যতটা আমরা সাধারণ মানুষ ভেবে থাকি? আসলে কিন্তু যেমন ভাবনা তেমন ঘটনা নয়।
এমনকি শূন্য থেকে পথ চলাটা খুব বেশি সহজ নয় বরং সফল কাজের পিছনে রয়েছে শত পরিমাণ কষ্ট এবং শ্রম কিন্তু সফলতা পেলে তা হয়ে যায় শান্তির।
অনেক সাধারণ ব্যক্তিরা কখনো কখনো কিছুটা অসাধারণভাবে নিজের মত করেই চিন্তা করে নেয় যে ইউটিউবাররা শুধুমাত্র পরিচিত হবার জন্যই ভিভিও তৈরি করে থাকে কিন্তু অনেকাংশেই সেটা ঠিক নয়। আমাদের সমাজ কিন্তু বর্তমানে প্রায় অনলাইনভিত্তিক হয়ে গিয়েছে এবং ইউটিউবে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও দেখে অনেকেই জানছে কিছু অজানা তথ্য এবং অনেকেই শিখছে কিছু না পারা কাজ। পাশাপাশি শিশুরা বিনোদনের মাধ্যমে তাদের মানসিক বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে।
সর্বোপরি আপনার হাতে যদি থাকে একটা স্মার্টফোন সেইসাথে আপনার কাছে যদি থাকে ভালো মানের একটি কন্টেন্ট আইডিয়া তাহলে আপনিই পারবেন ইউটিউবের দুনিয়ায় ভিডিও আপলোড করে বাজিমাত করতে।
লেখাটি নিয়ে মতামত