বিনোদনের সাথে বন্ধুত্ব শব্দটির অর্থ ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই বন্ধুত্বের সংগা আলাদা হলেও তাদের জীবনে বন্ধু বলে কিছু একটার উপস্থিতি আছেই। হতে পারে সেটা বই, হতে পারে অন্য একজন মানুষ, আবার হতে পারে একাকিত্বও। মানুষ আসলে বন্ধু বানায় কিভাবে? উত্তরে অনেকেই বলে তাকে যার সাথে কথা বলে, শেয়ার করে মানুষের ভালো লাগে সেই হয়ে ওঠে তার বন্ধু। কিন্তু বন্ধুত্ব কি শুধু মাত্র কথা বলা, শেয়ারিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ?
বন্ধুত্ব শুধু মানুষের মধ্যেই নয় রয়েছে মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক সৃষ্ট সকল প্রাণের মধ্যেই। পিঁপড়া, গাছপালা, পশু-পাখি সবার মধ্যেই রয়েছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আসুন একটু গভীরে গিয়ে দেখি। গাছের সাথে পাখির বন্ধুত্বের গভীরতা কবি সাহিত্যিকগণ তাদপর লেখনীতে প্রকাশ করেছেন। রচিত হয়েছে অনেক কবিতা, গল্প, ছন্দ। পিঁপড়াদের মধ্যে দলগতভাবে চলাচল দেখলেই বোঝা যায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বটা কতটা তীব্র।এরা তো কথার মাধ্যমে নিজেদের মনের বাব প্রকাশ করতে পারে না কিন্তু তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব কিন্তু বিদ্যমান।
তাহলে বন্ধুত্বটা যে আসলে কথা বলা বা মনের কথা শেয়ারিংয়ের মধ্যে কিনবা একে অন্যকে বোঝার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বন্ধুত্বতা হল আত্মার মিলন। আত্মিক সম্পর্ককেই বন্ধুত্ব বলে। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা যে একেক স্টেজে এসে চেঞ্জ হয় এটা তো আমরা সবাই-ই জানি কিন্তু এই বন্ধুত্বটা কিন্তু দৃঢ় হয় সেই ছোটবেলা থেকেই।
বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিশুদেরকে বিশেষ কোনো সমস্যায় কড়তে হয় না৷ আত্মিক সম্পর্ক তাদের আপনাআপনি-ই তৈরি হয়ে যায়। তবে কিছু গুরুত্ব তো দেওয়াই লাগে তাদের বন্ধু নির্বাচনের জন্য।তবে আপনি কিন্তু আপনার শিশুর বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রায়োরিটি দিতে পারেন পোষা প্রানীকে। যেকোনো পোষা প্রাণীর মাধ্যমেই আপনার সন্তান পেয়ে যেতে পারে খেলার সাথী, বেড়ে ওঠার সাথী। সেই সাথে তার মনে গড়ে উঠতে পারে এইসকল প্রাণীদের প্রতি মায়া-ভালবাসা।
আপনার বাচ্চাকে যদি আপনি পোষা প্রাণী এনে দেন সে তাকে কেয়ার করবে। ভালোবাসবে। খেলবে তার সাথে। এবং এরই সাথে সাথে তার মধ্যে সৃষ্টি হবে সকলকে ভালোবাসার বীজ। এই পোষা প্রাণীর মধ্যে হতে পারে বিড়াল, হতে পারে কুকুর। কুকুর যে কতটা প্রভুভক্ত হয় সেটা তো আমরা সবাই-ই জানি। একদিন একটা কুকুরকে খেতে দিলে সে সারাজীবন আপনার কথা মনে রাখবে। স্বার্থহীন প্রাণী সে। এছাড়াও হতে পারে পাখি, খরগোশ সহ আরো অনেক কিছু।
এসব পোষা প্রাণী যেমন হয়ে উঠবে আপনার সন্তানের বন্ধু তথা খেলার সাথী ঠিক তেমনি ভাবে আপনার শিশুর মানসিক বিকাশেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দিনশেষে নিজের একাকিত্বতা মেটাতে আপনার সন্তান পাশে পাবে একজন কে যাকে সে ভালোবাসবে। এই পোষা প্রাণীটির যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আপনার সন্তানের মধ্যে তৈরি হবে দায়িত্বশীল ব্যাক্তিত্বের।
শুধুমাত্র মানুষকেই বন্ধু বানাতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই৷ মানুষের থেকে আপনার সন্তানের জন্য উত্তম সাথী হবে এইসব প্রাণী যাদের মনে নেই স্বার্থপরতা। নেই ক্ষতি করার মন মামসিকতা। যে দিতে পারে আপমার সন্তানকে মানসিক প্রশান্তি। হয়ে উঠতে পারে আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্য। সেই সাথে পারে আপনার সন্তানের মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে তাকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে।
লেখাটি নিয়ে মতামত