শিশু তাঁর সৃজনশীলতা বিকাশে লেখালেখি অনবদ্য একটি উপহার।প্রশ্ন জাগে শিশু কেনো লিখবে? আচ্ছা তার আগে বলুন তো শিশু কেনো লিখবে না? তাঁর মাথায় ঘুরপাক খায় কতো কল্প কাহিণী,কখনো কবিতা পড়ে ছন্দবদ্ধ ভাবে সে নিজে ও চেষ্টা করে দু এক লাইন লেখার। যদি সে লেখাটা অপ্রকাশিত রয়েই যায় তবে সে কি আর আগ্রহী হবে?
শিশুরা কল্পনাপ্রবণ। মুভি দেখে,বাস্তব জগতের সাথে মেলানোর চেষ্টা করে। কখনো বা কমিক বই কিংবা শিশুতোষ কোন ম্যাগাজিনে ছোট্ট একটি গল্প ও শিশুকে নাড়া দিয়ে যায়৷ কখনো সুযোগ ঘটে সেগুলো নিয়ে বন্ধুদের সাথে দু এক লাইন বলার,আবার কখনো তা একা একা নিজের সাথে কথোপকথনের মধ্যে দিয়েই সমাপ্তি ঘটে। একটু ভেবে দেখুন তো! শিশুদের ভাবনা গুলো আমাদের খুব ভাবায়,সে ভাবনাগুলো যদি লেখার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করা যায়,কেমন হবে ব্যাপারটা?
শিশুকে একজন লেখক,প্রতিভাবান, সৃজনশীলতার বিকাশ,কবি,সাহিত্যিক হিসেবে গড়ে তোলতে লেখালেখির বিকল্প নেই। শিশু লিখবে তাঁর ভাবনাজগতকে প্রসারিত করার জন্যে, শিশু লিখবে তাঁর সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করার জন্য। শিশু লিখবে তাঁর লেখাকে ভালোবেসে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক শিশুকে লেখালেখিতে উৎসাহিত করার দারুণ কিছু ট্রিকসঃ-
চিঠি লেখাতে উৎসাহিত করা : শিশুকে চিঠি লিখতে উৎসাহিত করুন। বন্ধুদের জন্মদিনের ছোট্ট উইশ টা ও নিজের ভাষায় লিখতে বলুন। অভিযোগ, অভিমান গুলো দাদার কাছে, মামার কাছে চিঠির মাধ্যমে তুলে ধরতে বলুন। এতে করে শিশু তাঁর ভাবনা জগতকে প্রসারিত করতে পারবে।
গল্প পড়তে,বলতে ও লিখতে উৎসাহ দিন : প্রযুক্তি দিয়েছে বেগ,কেড়ে নিয়েছে আবেগ। তাই শিশুকে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মধ্যে বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস পড়া ও শোনাতে উৎসাহিত করুন। বিভিন্ন স্পেশাল ডে তে তাকে বই উপহার দিন।বই এর রিভিউ টা গুরুজনদের শোনাতে বলুন। বইটা পড়া শেষ করে, তা নিয়ে বেশ কিছু লাইন লিখতে বলুন। এতে করে শিশু লেখালেখির প্রতি আগ্রহী হবে।
ডায়েরি লিখতে দিন : বলা হয়ে থাকে ডায়েরি বিষয়টা সবসময়ই ব্যক্তিগতো।যেখানে নিজের একান্তই ভালো লাগা, খারাপ লাগার কথা থাকে, নিজস্ব চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটবে,আত্মবিশ্বাস বাড়বে। দৈনন্দিন আলাপন ডায়েরিতে লেখার মধ্যে দিয়ে শিশু তাঁর লেখালেখির জগতে পদচারণা করার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
কবিতা লেখা : শিশুর মনে অনেক সময়ই ছন্দের তালে তালে শব্দ অনায়াসে চলে আসে। তখন সে কবিতার প্রতি ঝুঁকে। বিভিন্ন আশা,প্রত্যাশা কবিতার মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে। আর কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে শিশুতোষ কবি মনের উন্মেষ ঘটে। তাই শিশুর ছোট্ট কোমলময় জগতটা গড়ে উঠুক কবিতাময়।
ভ্রমণকাহিনী লেখা,গল্পের পট সৃষ্টি : মামার সাথে বই মেলায় একদিন কিংবা জাদুঘরে একদিন এমন টাইপস এর বহু গল্প শিশুদের মনে দারুণ প্রভাব ফেলে এবং নিজেরা ও চায় ঘুরে আসতে, কাহিণী গুলো গল্পের ছলে জানাতে বন্ধুদের। সেজন্য লেখালেখি শুরু করার একটা অংশ জুড়ে থাকুক শিশুর ভ্রমণকাহিনী। মামা বাড়িতে যাওয়া কিংবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার নানা কাহিণী বর্ণিত হোক শিশুর সহজ সরল বাক্যে,প্রাণবন্ত এক লেখা শিশুকে লেখক হতে সাহায্য করবে।
লেখালেখিতে উৎসাহ : সৃজনশীলতা বিকাশে শিশুকে তার মনোজাগতিক বিকাশ সাধনে, শিশুর কল্পনার লেখাটি সুন্দর করে গুছিয়ে তুলতে শিশুকে লেখালেখিতে উৎসাহ করা অতি প্রয়োজন।
তাই শিশুকে সুন্দরচিত্তে,ক্রিয়েটিভ মাইন্ড ও জিনিয়াস হিসেবে গড়ে তোলতে শিশু লেখালেখি করবে। প্রতিভা এবং আগ্রহকে কাজে লাগানোর জন্য শিশু লেখালেখি করবে। তাঁর এই অনবদ্য সৃষ্টি প্রকাশিত হবে বিভিন্ন শিশুতোষ ম্যাগাজিনে, যা দেখে শিশু আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে। নিজেকে জানান দিতে শিশু লেখালেখি করবে।
লেখাটি নিয়ে মতামত