Powerful people makes places powerful কথাখান আসলেই অমৃত, খাঁটি একদম। ভারতের অন্য সব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তুলনায় কর্ণাটাকা বা স্যান্ডালউড ( Sandalwood) ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি খুব একটা জাতের ছিলো না। কিন্তু এখন জাতে উঠে গেছে এই ইন্ডাস্ট্রি ও। ঐ যে প্রথম লাইনটার মতোই, পাওয়ারফুল মানুষ জায়গাকেও পাওয়ারফুল বানিয়ে ফেলে। ইয়াশ সেটাই করে দেখিয়েছেন। KGF দিয়ে।
একটা রিজিওনাল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ছবি ভারতবর্ষের Most Wanted Film এর তকমা পেয়ে গিয়েছে। একজন মানুষই বলতে গেলে পুরো একটা ইন্ডাস্ট্রিকে পাওয়ারফুল বানিয়ে দিয়েছেন। যে স্যান্ডালউড বছর পাঁচেক আগেও ঘটা করে অন্য ইন্ডাস্ট্রির মুভি রিমেক করতো ; তারা নিজেরাই এখন Epicenter! নতুন নতুন কনসেপ্ট এই ইন্ডাস্ট্রি দেয়া শুরু করেছে।
লেখাটা ইয়াশ বা স্যান্ডালউড নিয়ে নয়। উদাহরণও কেবল ইয়াশের নয়, আরো অনেকেরই আছে। ধরুন রজনীকান্ত! ভারতের অন্যতম ভার্সেটাইল ইন্ডাস্ট্রি তামিলের ডেমিগড। এই এত বছরের তামিল ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে ওদের সুপারস্টার ঐ একজনই। আপনার কাছে বাকীরা সবাই সুপারস্টার হতে পারেন ; থামিজানদের কাছে সুপারস্টার ঐ একজনই। কারণও পরিষ্কার, সাউথের উল্লম্ফন এই বাস কন্ডাক্টরের হাতেই শুরু হয়েছিলো।
অথবা জ্যাকি চ্যান বা ব্রুসলির কথাই ধরেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুভি মার্কেট হলো চায়না। আর চায়নিজ মুভির ফেস মূলত এই দুইজনই। চায়না মুভির এত পরিচিতির হোতা এই দুইজনই। কথাটা হলো, বদলটা একজনই আনতে পারেন। স্রেফ একজনই! ইয়াশ হোক বা ব্রুসলি, রজনী অথবা এই দিকে এসে সালমান শাহ। ৯৩ থেকে ৯৬ পর্যন্ত এদেশের একটা বিশাল গোষ্ঠী বুঁদ হয়ে ছিলো একটা নামে। সালমান শাহ! ৯০ দশকে এদেশের ইয়াং জেনারেশন পকেটে টুপি রেখেও জানাযায় দাঁড়িয়ে মাথায় রুমাল বেঁধে নিত। পাড়ার দোকানগুলোতে ক্যাপিস্টান বা 555 এর জায়গায় মার্লবোরো স্থান করে নিতে থাকে। গোল ফ্রেমের এভিয়েটর চশমা তো রাতারাতি হটকেক।
সিনেমা নাকি কনটেন্টেই চলে! তবে সালমান দেখিয়েছেন যে সিনেমা শুধুমাত্র নামেই চলতে পারে। খোদ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে আজকের বলিউড বাদশাহ শাহরুখ সালমানকে স্টাইল আইকন বলেছিলেন। এমনটাও শোনা গিয়েছিল মুম্বাই থেকে ভালো অফারও ছিলো। সবই ছিলো, একেবারে সব। কিন্তু এখন কিছুই নেই। ৪০০ হল কমে এখন ৫০+। এফডিসি আছে, শ্যুটিং কম, অন্য কাজ বেশী নিয়ে। সালমানের সময়কার পরিচালকরাও অনেকেই আছেন ; না থাকার মত করেই।
ওয়েব কনটেন্ট, ওটিটি, অমন আরো বিবিধ বিষয় চলে এসেছে দৃশ্যপটে। হয়তো সামনে আরো আসবে। তবে স্বর্ণালী সেই সময়টা হয়তো সহসাই ফিরছে না।২৪ বছরে এদেশের সিনেমা যেন ২৪ যুগ পিছিয়েছে। সিনেমা হলের জায়গায় সুরম্য শপিং কমপ্লেক্স দাঁড়িয়েছে। সিনেমাটা আর দাঁড়ায় নি।
উপরে সব ইন্ডাস্ট্রির মত আমাদেরও একজন ছিলো। সে পেরেওছিলো একটা উৎসবমুখর জগত উপহার দিতে। সে পেরেছিলো একাই স্বপ্নের পারদ চড়িয়ে দিতে। একটা জেনারেশনকে একাই বুঁদ করে রাখতে। শূন্যতার কালে কেবলই ‘ কোথাও কেউ নেই ‘ এর অনুভূতিটাই রেখে গেলেন কেবল।
আমাদেরও ‘ একজন ‘ ছিল বটে!
লেখাটি নিয়ে মতামত